বাড়বকুণ্ড ⛰
আজ বলবো বাড়বকুন্ডের কথা। অতি অপ্রাকৃতিক কোন কিছুই দেখা না পেলেও সাহসী সব মানুষদের ও আমরা গা ছমছমে অনুভূতিতে চুপসে যেতে দেখেছিলাম যেখানে। তাই দিনের সেই অনুভূতি রাতে ক্যাম্পিং করার চিন্তাও কখনো মাথায় আনতে দেয়নি আমাদেরকে।
বলছিলাম বাড়বকুণ্ড ট্রেইল এর কথা। গা ছমছমে অনুভূতি বলতে যে সত্যিই একটি বিষয় আছে বাড়বকুণ্ড যাবার আগে কখনোই তা ফিল করিনি। এই স্থানে দিন ঘুরাঘুরির যতটা ভয়ানক তা থেকে বোঝা যায় রাতে ক্যাম্পিং করলে তা হবে আরো ভয়াবহ কিছু।
আমরা ২ জনের ঘুরে এসেছিলাম বাড়বকুণ্ড ট্রেইল থেকে। যদিও ভাগ্য জোরে বেঁচে ফিরে আসলাম ।হঠাৎ প্লানে রাতে সকালে বের হয়ে পরলাম আমরা২জন বাড়বকুণ্ডস্টেশনে থেকে পাহাড়ের বুক চিরে বয়ে চলা এ পথ শেষ হয়েই হঠাৎ দেখা মেলে বর্ষায় প্রাণবন্ত, অস্থির বেগে ছুটে চলা এক ঝিরিপথের। ঝিরিপথের আশেপাশের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করলেই বোঝা যায় প্রতি বর্ষাতেই এ ঝিরিপথ পূর্ণ যৌবন পেয়ে সগৌরবে বড় বড় গাছের কান্ড ভাসিয়ে নিয়ে পাহাড়ের বুকে এক ঝড় তুলে বয়ে চলে! ঝিরি ছেড়ে কিছু পথ হাটলেই দেখা মেলে বৃত্তাকার এক পাহাড়ের। আরকটু সামনে গেলেই দেখা মেলে মাঝারি উঁচু এক পাহাড়ি পথে কে যেন সিঁড়ি তৈরি করে উপরে ওঠার রাস্তা করে দিয়েছেন।
🔰যাবার আগে অবশ্যই দেখে যাবেন-
🎯বর্ষায় যেখানে যাওয়া মানাঃ
বাড়বকুণ্ড ট্রেইল সেই সিঁড়ি পথ ধরে উপরে উঠতেই দেখা মিলে এক অদ্ভুত স্থাপনার। প্রায় কয়েকশত বছরের পুরনো কতোগুলো মন্দির। বহু বছরের ইতিহাস বয়ে বেড়ানো শীর্ণজীর্ণ মন্দিরের দেয়াল, ইট-সুড়কি দেখে ধারণা করা যায় মোটামুটি ৩০০-৪০০ বছর আগের স্থাপনা এটি। এর নির্মাণশৈলী কিছুটা মোগলদের মতো। গহীন এ পাহাড়ের ভেতর এমন পুরনো মন্দির গুলো যেন এক অদ্ভুত রূপ আর ভয়ংকর পরিবেশের জন্ম দিয়েছে।
একেই যেন বলে ভয়ংকর সুন্দর। বাড়বকুণ্ড তাদের মতে এই জলে স্নান করলে গঙ্গা স্নানের সম্ভবনা অলৌকিক ভাবে বেড়ে যায়। কিন্তু প্রচলিত মিথগুলো শুনলে চমকে ওঠেন বেশিরভাগ মানুষই। বাড়বকুণ্ড ট্রেইলে কয়েকশ’ বছরের পুরনো কালভৈরবী মন্দিরের ঠিক পাশেই এই অগ্নিকুণ্ডের অবস্থান। অনেকের মতে, হাজার বছরেরও পুরনো এটি। কিন্তু এই কূপের পানিতে আগুন জ্বলার কারণ খুঁজতে গিয়ে অনেক রকমের উত্তর মেলে। অনেকের মতে এটি অভিশপ্ত একটি কূপ, কেউ কেউ বলেন এটি প্রাকৃতিকবাড়বকুণ্ড মন্দিরে উঠার সিঁড়ির পাশে তেতুল গাছের নিচে দধি ভৈরব অবস্থিত (বর্তমানে তেতুল গাছটি নেই)। এটি একটি গোলাকৃতির শিলাখণ্ড। এর উপরের দিকে একটি গর্ত আছে যেখানে দুধ দিলে তা নিমিষেই দই-এ পরিণত হয়। এই কারনেই একে দধি ভৈরবঝিরির পথ চলে চলতে চলতে, বলি বিখ্যাত অগ্নিকুণ্ড নিয়ে বলা বিজ্ঞানের কথা। যতদূর জানা গেছে, এই কাড়াখাম্বা পাহাড়ে ব্রিটিশ মিথেন গ্যাসের সন্ধ্যান পাওয়া গিয়েছিল। কোনো এক কারণে সেসময় গ্যাস কূপের মুখ বন্ধ করে দেয়া হয় সীসা দিয়ে।
তারপর থেকে অগ্নিকুন্ডের এখানকার পানিতে আগুন জ্বলে। বৈজ্ঞানিক বা প্রচলিত মত যাই হোকনা কেন, বলার অপেক্ষা রাখে না, এর পাশে দাঁড়ালে গা ছমছমে ব্যাপার কাজ করে! মনে হবে কোনো এক অভিশপ্ত জায়গায় দাঁড়িয়ে আছেন আপনি।👣যেভাবে যাবেনঃঝর্ণার পথে চলতে চলরে বলি কি করে আসবেন এখানে, বাড়বকুণ্ড ট্রেইল অপরিচিত হওয়ার কারনে অনেকেই এখানে যায় না ,অথচ এই ট্রেইল ঘুড়ার জন্য বেশ ভাল একটি প্লেস। এখানে আসার সব থেকে সহজ উপায় হলোচট্রগ্রাম গামী বাসে আসা। বাস থেকে নেমে পরবেন বাড়বকুন্ড স্টেশনের কাছেই। সেখান থেকে মাত্র 25/30 মিনিটের পায়ে হাটার পাকা পথ পেরিয়ে শুরু পাহাড়ি ট্রেকিং এর পথ। বাড়বকুণ্ড বাজারের কিছু হালকা মানের হোটেল আছে সেখানে করতে পারেন সকালের নাস্তা কিংবা দুপুরের লাঞ্চ। যাইহোক, ঘুরতে জান, ট্যুর জান, ট্রেকিং এ জান। যেখানে মন চায় জান। যেভাবে মন চায় জান। কিন্তু প্রকৃতি ও পরিবেশের ক্ষতি হয়। এমন কিছুই করবেন না
🙏🏼Subscribe official YouTube Channel