”দেবতাখুম অভিযান”
দেবতাখুমের র্যুটপ্ল্যানঃ
ঢাকা – বান্দরবান -রোয়াংছড়ি বাস স্ট্যান্ড – রোয়াংছড়ি বাজার – কচ্ছপতলী – শীলবাধা পাড়া – দেবতাখুম
একদিনের ট্যুর এর জন্য দেবতাখুম অভিযানে যেতে পারেন । এই অভিযানে ট্র্যাকিং থাকায় আগে থেকেই হাঁটার এবং পাহাড়ে চরার মানুষিক প্রস্ততি নিতে হবে । ট্র্যাকিং, ভেলায় চরা , সাঁতার কাটা , পাহাড়ে চরা, উপজাতিদের জীবনযাপন কাছ থেকে দেখা, মোটকথা সবই পাবেন এই এক অভিযানে । যারা আমার মতো পাহাড়ে চরা আর কায়াকিং করতে ভালোবাসেন তাদের জন্য দেবতাখুম আদর্শ জায়গা । এডভেঞ্চার আর থ্রিলিং এ ভরপুর এই অভিযান । পাহাড়ি পরিবেশ যে কতোটা ভয়ানক সুন্দর হতে পারে বান্দরবান না গেলে তা বলে বুঝানো আসলেই কঠিন । দুই পাহাড়ের মাঝখানে এই দেবতাখুম । ভেলা দিয়ে যেতে হয় । কিছু জায়গায় পানির বেশ গভীরতা আছে । এই জায়গাটা কেমন যেন রহস্যময় লেগেছে আমার কাছে । কারণ প্রকৃতির এই সৌন্দর্য একদিকে অনেক ভাল লাগছিল অপরদিকে নিস্তব্ধ পরিবেশে কেমন ভয় লাগছিল সাঁতার না পারার কারণে 📷 । মোটকথা দেবতাখুম গেলে আপনি পুরাপুরি প্রকৃতির সাথে মিশে যাবেন ।
#যাতায়াতঃ
ঢাকা – বান্দরবান(বাস ভাড়া ৬২০/-) রোয়াংছড়ি বাস স্ট্যান্ড(অটো ভাড়া ১৫/-) রোয়াংছড়ি(বাস ভাড়া ৬০/-) কচ্ছপতলী(সিএনজি ভাড়া জনপ্রতি ৬০/-) শীলবাধা পাড়া (পায়ে হেঁটে)-দেবতাখুম
ঢাকা কমলাপুর থেকে বান্দরবানের সরাসরি বাস আছে ভাড়া ননএসি ৬২০/-
আমরা কোনো বাসের টিকিট পাই নাই।তাই চট্টগ্রাম মেইল ট্রেনে ঢাকা,কমলাপুর থেকে প্রথমে চট্টগ্রাম যাই।
ট্রেন ছাড়ে ১০.৩০ টায়-ভাড়া ১২০/-।
এছাড়া Turna Express ঢাকা থেকে ছাড়ে ১১ঃ৩০ টায় এবং চট্টগ্রাম পৌঁছায় ৬ঃ২০ এ । ভাড়া ৩৪৫/- শোভন চেয়ার ।
চট্টগ্রাম পৌঁছাই সকাল ৮ টার দিকে।চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবানের বাসে উঠতে হবে বাস টার্মিনাল থেকে।বাসে করে রেলস্টেশন থেকে বাস টার্মিনাল।
বান্দরবানের সিটিং বাসের ভাড়া ১১০/-।বান্দরবান পৌঁছাতে দুই আড়াই ঘন্টা লাগবে ।
বান্দরবান থেকে কচ্ছপতলি যেতে ২ ঘণ্টার মতো সময় লাগতে পারে ।
#থাকার_জায়গা
রোয়াংছড়ি তে থাকার জায়গা নেই । তবে ক্যাম্পিং করে থাকতে পারবেন চাইলে । থাকার জন্য শহরে যেতে হবে । বান্দরবান বাজারে কম খরচে থাকার হোটেল পাবেন ।
#খাবার
দুপুরে খাওয়ার জন্য কিছু শুকনা খাবার কিনে নিয়ে যেতে হবে । কারণ কচ্ছপতলী বাজারের পরে আর হোটেল পাবেন না । তবে আপনি চাইলে আগে থেকেই গাইডের সাথে কথা বলে শীলবাধা পাড়া তে খাবার এর বেবস্থা করতে পারবেন ।
#গাইড
আমাদের গাইড ভাড়া ১০০০/- লেগেছিল ঈদ এর সময় যাওয়ার কারণে । সাধারণত ৭০০/৮০০/- এর মতো লাগে । আমরা আগেই পলাশ ভাই কে ঠিক করে রেখেসিলাম । পলাশ দাদা – ০১৮৩৮৭১৭৭৩৫ ।
#ভেলা_কায়াকিং
জনপ্রতি ১০০/- করে নিবে । তবে সাঁতার না জানলে লাইফ জ্যাকেট সঙ্গে নিয়ে যাওয়াই বেস্ট অপশন ।কারণ খুম এর পানি কিছু জায়গায় অনেক গভীর । লাইফ জ্যাকেট আমরা ১০০/- দিয়ে একটা ভাড়া করেছিলাম । ঈদ এর সময় থাকায় আর পাইনি । এক ভেলায় দুইজন উঠবেন ।
#কিছু_গুরুত্বপূর্ণ_কথাঃ
***সাথে অবশ্যই (ভোটার আইডি কার্ড বা স্টুডেন্ট আইডি কার্ড বা পাসপোর্ট বা জন্মনিবন্ধনের ফটোকপি ) যেকোনো একটার ফটোকপি দুই কপি সাথে নিবেন । এতে আপনার ৩০ মিনিট এর মতো সময় বাঁচবে । না নিলে রোয়াংছড়ি বাজার থেকে ফটোকপি করতে পারবেন ।
***জায়গাটা বেশ সেফ । আর্মিদের তত্ত্বাবধানে থাকায় নিরাপত্তা নিয়ে নিশ্চিত থাকতে পারেন ।
***সাথে অবশ্যই পলিথিন নিবেন । এতে মোবাইল , মানিব্যাগ ইত্যাদি ভিজবে না । ময়লা না ফেলে পলিথিনে নিবেন ।
***একদিনে ট্যুর দেওয়ার জন্য অবশ্যই সকাল সকাল বান্দরবান পৌছা অনেক গুরুত্বপূর্ণ । সকাল ৮ টায় প্রথম বাস ছাড়ে রোয়াংছড়ি বাস স্ট্যান্ড থেকে ।
***রোয়াংছড়ি বাজার থেকে দিনের শেষ বাস ছাড়ে বিকাল ৫ টায় । তাই ৫ টার আগে অবশ্যই রোয়াংছড়ি বাজার পৌছাতে হবে । আমরা বাস ছাড়ার মাত্র ৫ মিনিট আগে আসছিলাম 📷 । তবে কোনো কারণে বাস মিস করলে বেশি খরচ দিয়ে চাদের গাড়ী ভাড়া করতে হবে ।
*** বর্ষার সময় গেলে পাহাড়ে উঠতে কষ্ট হলেও জায়গা আরো বেশি উপভোগ করতে পারবেন।
*** কেউ বেশি দিনের ট্যুর দিতে চাইলে দেবতাখুম এর পাশাপাশি তিনাপ সাইতার ও ঘুরে আসতে পারেন ।
*আর ঘুরতে গিয়ে কেউ ময়লা ফেলবেন না।জায়গাটা খুব পরিচ্ছন্ন। পরিছন্ন রাখুন অগ্রজদের জন্য।*
Thanks to Rimon Mahmud
& Fuad Hassan Bhuiyan
for helping me to make this post .
কোনো কিছু জানতে চাইলে জিজ্ঞাস করতে পারেন 😀