এক সময় যা ছিল স্বপ্ন তা আজ বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে। শুধু দেশের মধ্যে নয়, দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টানেল হচ্ছে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে। যা ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হতে চলেছে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মাণাধীন টানেলের মাধ্যমে যুক্ত হচ্ছে নদীর উভয়পাড় অর্থাৎ চট্টগ্রামের পতেঙ্গা পয়েন্ট ও আনোয়ারা পয়েন্ট। এর মাধ্যমে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম হবে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন।’ দেশজুড়ে চলমান মেগা প্রকল্পসমূহের মধ্যে স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেল প্রতিষ্ঠার কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর তা ঐতিহাসিক একটি ঘটনায় পরিণত হবে।
প্রাণঘাতী করোনার কারণে বিশ্বময় অস্থির পরিস্থিতির সৃষ্টি হলেও একদিনের জন্যও এ টানেল নির্মাণ কাজ থামেনি। তবে করোনার কারণে দেশী-বিদেশী বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী এবং শ্রমিক-কর্মচারীদের কেউ কেউ দীর্ঘসময় কাজে যোগ দিতে না পারলেও এখন তা চলছে পুরোদমে।
প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হতে চলেছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা পয়েন্ট থেকে কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণপাড়ে আনোয়ারা পয়েন্ট পর্যন্ত একটি টিউবের বোরিং এবং রিং প্রতিস্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী নবেম্বরের শেষ বা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ নাগাদ ইউটার্নের মাধ্যমে অপর টিউব প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হবে। এ প্রক্রিয়ায় টার্গেট অনুযায়ী আগামী ২০২২ সালের ডিসেম্বরে এ টানেল নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে বলে প্রকল্প পরিচালক সূত্রে জানানো হয়েছে।
চীনের সাংহাই নগরীর আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশ থেকে ১৮ থেকে ৩১ মিটার গভীরতায় টানেল নির্মাণের কাজ চলছে। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর এ মেগা প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানেলের মূল খনন কাজ উদ্বোধন করেন। নির্মাণ কাজে জড়িত রয়েছে চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি ও চায়না রোড এ্যান্ড ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। এছাড়া প্রজেক্ট ডিরেক্টরসহ কিছু বাংলাদেশী প্রকৌশলীও আনুষঙ্গিক এই কর্মযজ্ঞে জড়িত। ইতালি, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও সিঙ্গাপুরের কিছু বিশেষজ্ঞ এ প্রকল্পে বাংলাদেশের পক্ষে কনসালটেন্ট হিসেবে নিয়োজিত আছেন।